প্রতিনিধি 5 May 2025 , 7:29:13 প্রিন্ট সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টার, বান্দরবান
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বর্ষায় সবুজ, শীতে misty, চিরকাল মনোহর—এভাবেই নিজেকে সাজিয়ে রাখে বান্দরবান জেলা। ৪,৪৪৭ বর্গকিলোমিটার বিস্তীর্ণ এই পার্বত্য ভূমি পাহাড়, ঝরনা, নদী ও আদিবাসী সংস্কৃতির অপূর্ব সংমিশ্রণে পরিণত হয়েছে প্রকৃতিপ্রেমীদের স্বরূপ স্বর্গরাজ্য।
প্রকৃতির নৈসর্গিক রঙ্গভূমি
নীলগিরি চূড়া থেকে সূর্যোদয় দেখা মানেই এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা। অপরদিকে, নাফাখুম ঝরনার গর্জন শরীরে এক অন্য শক্তি সঞ্চার করে। বগালেকের টিলায় বসে সন্ধ্যার আভায় পাহাড়ের ছায়া অবলোকন করলে বোঝা যায়, প্রকৃতিই here paints its masterpiece. থানচি হ্রদে নৌকাযাত্রা, আর কেওক্রাডং’এর ট্রেক—প্রত্যেকটি যাত্রা যেন একেকটি কবিতার ছত্র।
জলজ বৈচিত্র্যের খনি
সাঙ্গু নদীর রোমাঞ্চকর বুনি এবং মাতামুহুরীর শান্ত স্রোত—দুটি মিলেমিশে বান্দরবানের জলে-জীবনের চিত্রকে করে তোলে পূর্ণাঙ্গ। মাছ, শামুক, ভাঙ্গিমচি সহ অগণিত প্রজাতির আবাসস্থল এখানে।
সাংস্কৃতিক পাওয়ারহাউস
বান্দরবানের রূপের মূল উপাদান এখানকার আদিবাসী জনগোষ্ঠী: মারমা, বম, ত্রিপুরা, খুমি, ম্রো ও আরও অনেকে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে তারা তাদের নিজস্ব ভাষা, নৃত্য, গান ও খাদ্যসংস্কৃতিকে ধরে রেখেছে। উৎসব-আচার, রঙীন পোশাক ও গ্রাম্য হস্তশিল্প বান্দরবানের সামাজিক বর্ণমালায় অদ্ভুত ঝলক যোগ করে।
চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা
যদিও বান্দরবান প্রাকৃতিক ধন-সম্পদের জন্য খ্যাত, উন্নয়ন ক্ষেত্রে যোগ্য মনোযোগের অভাব লক্ষ্য করা যায়—বিশেষ করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও নিরাপত্তায়। পার্বত্য শান্তি চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন এবং আদিবাসী সমাজের জীবনমান উন্নয়ন নিশ্চিত করলেই এই জেলা হয়ে উঠবে টেকসই পর্যটন এবং মানবিক অগ্রযাত্রার মডেল।
পথের দিশা
সংরক্ষণমুখী নীতি, পর্যটন অবকাঠামো উন্নয়ন, স্থানীয় অধিবাসীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ গ্রহণ—এই চারটি স্তম্ভে দাঁড়িয়ে গড়ে তোলা যেতে পারে এক স্বপ্নিল বান্দরবান। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে, গবেষণা-ভিত্তিক পরিকল্পনায় ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের সম্পৃক্তি দিয়ে পার্বত্য অঞ্চলের এই রত্নকে করা যায় দেশের সেরা টেকসই পর্যটন গন্তব্য।
বান্দরবান কেবল পাহাড়ের নাম নয়—এটি এক অপার লীলাভূমি, যেখানে প্রকৃতি ও সংস্কৃতি দোল খায় মিলেমিশে, এবং প্রতিটি পদচারণা হয়ে ওঠে এক নতুন আবিষ্কার।