প্রতিনিধি 13 May 2025 , 8:41:12 প্রিন্ট সংস্করণ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ ইয়াসিন আরাফাত
চাঁপাইনবাবগঞ্জের হোসেনডাঙ্গা এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুই ভাই ও তাদের স্ত্রীদের পিটিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষরা। এতে নারীসহ আহত হয়েছে ৪ জন। এ ঘটনায় পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করেছে। গত বুধবার (০৭ মে) বিকেলে সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের হোসেনডাঙ্গা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা বর্তমানে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহতরা হলেন, হোসেনডাঙ্গা গ্রামের মৃত সাইফুদ্দিন মন্ডলের ছেলে মো. ইসমাইল, তার ভাই মো. বাবু, তাদের স্ত্রী খালেদা বেগম ও বৃষ্টি বেগম। এ ঘটনায় আহত ইসমাইল ও বাবুর ভাই কাইয়ুম রেজা বাদী হয়ে ৯ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলাম মনি মেম্বার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী এই হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। স্থানীয় বাসিন্দা, প্রতক্ষ্যদর্শী ও আহতদের স্বজন সূত্রে জানা যায়, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বুধবার বিকেলে হঠাৎ করেই বাড়ির সামনে ডেকে নিয়ে মারধর শুরু করে। পরে তারা নিজেদের রক্ষা করার জন্য বাড়িতে পালিয়ে যায়। এসময় ইসমাইল ও তার ভাই বাবু আত্নরক্ষা করতে টয়লেটে প্রবেশ করে। মনিরুল ইসলাম মনি মেম্বারের সন্ত্রাসী বাহিনী তাদেরকে টয়লেটের দরজা ভেঙে বেধড়ক মারধর করে।
এসময় ইসমাইল ও বাবুর স্ত্রী তাদের স্বামীকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে খালেদা ও বৃষ্টি বেগমকেও মারধর করে তারা। পরে বাড়ির ভেতরে থাকা আসাবাবপত্র, স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ লুট করে মনি মেম্বারের লোকজন। এসময় তারা নগদ ৬ লাখ টাকা ও ৩ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার লুট করে তারা।
পরে জরুরি সহায়তা ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় পুলিশ। পরে হামলার মূলহোতা মনি মেম্বারসহ দুজনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে সদর মডেল থানা পুলিশ। এদিকে, স্থানীয়রা আহতদের উদ্বার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে।
আহত ইসমাইল হোসেন জানান, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করা হয়। বাড়ির নারী সদস্যদেরকেও ছাড় দেয়া হয়নি। পুরো শরীরের বিভিন্ন স্থানে রড, লাঠিসোটা দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। আমরা এর বিচার চাই। পুলিশ হাতেনাতে আটক করেছে দোষীদের। পুলিশ আর কিছুক্ষণ পর গেলে হয়ত আমাদেরকে মেরেই ফেলতো তারা।
আহত খালেদা বেগম বলেন, আমাদেরকে এমনভাবে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। পুলিশ নিজেই সরেজমিনে গিয়ে তা দেখেছে। আমাদের গায়েও হাত দেয়া হয়েছে। তবুও পুলিশ মামলা নিতে গরিমসি করছে। তারা নাকি বড় নেতা, রাজনৈতিক প্রভাব অনেক। তাই ৩২৬ ধারায় মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে পুলিশ। এমনকি এখনও নানারকম ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে, যাতে মামলা তুলে নেয়া হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান জানান, হামলার ঘটবা শুনে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে দুজনকে হাতেনাতে আটক করে। যে পরিমাণ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে, তা যাচাই-বাছাই ও পর্যালোচনা করেই মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান ওসি।