অন্যান্য

লঘুচাপের প্রভাবে দিনভর কুড়িগ্রামে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি: জনজীবনে স্থবিরতা

  প্রতিনিধি 30 May 2025 , 3:13:37 প্রিন্ট সংস্করণ

কামরুল হাসান

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে কুড়িগ্রামে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল থেকেই আকাশ ঢেকে আছে ঘন মেঘে। থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আর দমকা হাওয়ার দাপটে পুরো শহর যেন গুটিয়ে এসেছে চুপচাপ নিস্তব্ধতায়।

বৃষ্টির শুরু থেকেই শহরের রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যায়। কোথাও নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য, নেই পথচারীর ভিড়। প্রয়োজন ছাড়া কেউই ঘর ছেড়ে বের হচ্ছেন না। যারা বের হচ্ছেন, তারা ছাতা কিংবা রেইনকোটে নিজেদের আড়াল করে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। শহরের ব্যস্ততম সড়কগুলো যেন হঠাৎ হয়ে উঠেছে জনশূন্য।

দুর্ভোগ বেড়েছে খেটে খাওয়া মানুষদের। রিকশাচালক, দিনমজুর ও ছোট ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। শুক্রবার (৩০ মে) সকাল ১১টায় শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অনেক অটো রিকশাচালক অলসভাবে বসে সময় কাটাচ্ছেন।

একজন অটো রিকশাচালক হালিম (২৬) বলেন,
“সকালে বের হইছি অটো রিকশা নিয়ে, কিন্তু যাত্রীই নাই। বৃষ্টি আর ঠান্ডা বাতাসে মানুষ রাস্তায় বের হয় না। সকাল থেকে এখন পর্যন্ত মাত্র একটা ভাড়া পাইছি। কিস্তির টানেই নামছি রাস্তায়।”

একই হতাশা ঝরেছে কাপড় বিক্রেতা মাঈদুল ইসলামের কণ্ঠে।
“এই রকম আবহাওয়ায় ক্রেতা বলে কিছুই আসে না। দোকান খুলে বসে থাকতে হচ্ছে শুধু। সকাল থেকে কিছুই বিক্রি করতে পারি নাই। কষ্টে আছি। কর্মচারীর বেতন দিব কীভাবে, বুঝতেছি না।”

কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাব সংলগ্ন এক ক্ষুদ্র চা দোকানদার মোঃ জলিল মিয়া বলেন,
“সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। দোকানে বেচাকেনা একেবারেই নাই। তবু দোকান খুলে বসে থাকি, যদি কিছু আয় হয়।”

এদিকে শহরের নিচু এলাকাগুলোর অনেক জায়গায় ইতোমধ্যে পানি জমে গেছে। কাদামাটির কারণে রাস্তাঘাট হয়ে পড়েছে বিপজ্জনক। বিশেষ করে স্কুলগামী শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি ভোগান্তির মুখে পড়েছেন।

রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান,
“শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত কুড়িগ্রামে ৩৩ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বঙ্গোপসাগরের ওপর সৃষ্ট লঘুচাপটি ধীরে ধীরে দুর্বল হচ্ছে। এটি পুরোপুরি কেটে গেলে আবহাওয়ার উন্নতি হবে বলে আশা করছি।”

প্রকৃতির এমন আচমকা বদলে জনজীবনে নেমে এসেছে অচলাবস্থা। দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে কুড়িগ্রামের সাধারণ মানুষ। আবহাওয়ার উন্নতির অপেক্ষায় প্রহর গুনছে শহর।

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ