অন্যান্য

৮২৩ কোটি টাকার ‘জলময়’ প্রকল্পে ভাসছে খুলনা

  প্রতিনিধি 17 June 2025 , 3:21:23 প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক খুলনা, ১৭ জুন ২০২৫

মাত্র এক রাতের ভারী বর্ষণেই ডুবে গেল খুলনা মহানগরীর প্রায় অর্ধেক এলাকা। আষাঢ়ের শুরুতেই মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে সোমবার রাতভর হওয়া ৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিতে হাঁটুপানিতে তলিয়ে যায় নগরীর প্রধান সড়ক, বাসাবাড়ি, দোকানপাটসহ বহু স্থাপনা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী। অথচ জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে প্রায় ৮২৩ কোটি টাকার প্রকল্প।

খুলনা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এই বৃষ্টিপাত ২০ জুন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

❝রাস্তা ডুবেছে মোটরসাইকেলের অর্ধেক পানির নিচে❞

৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তুষার কান্তি দাস বলেন, “সকালে বাসা থেকে বের হয়েই দেখি রাস্তায় কোমরসমান পানি। খুলনা-যশোর মহাসড়ক ছাড়া প্রায় সব সড়ক ডুবে গেছে।” তিনি অভিযোগ করেন, ড্রেন নির্মাণের কাজ ফেলে রাখায় পানি নামার সুযোগ নেই। শিরিশ নগরের রিকশাচালক আজমল হক বলেন, “আগে বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে যেত। এখন বছরের পর বছর ড্রেন-কালভার্ট করেও কোনো কাজে আসছে না। বরং আয়-রোজগার বন্ধ, কিন্তু মালিককে ঠিকই জমা দিতে হয়।

জলাবদ্ধতার প্রকৃত কারণ কী ?

বিশেষজ্ঞদের মতে, নগরীর ২২টি খাল দখলমুক্ত না করা, নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার না করা এবং প্রাকৃতিক জলাধার ভরাট করাই মূলত জলাবদ্ধতার কারণ।খুলনা নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, “ভৈরব ও রূপসা নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ায় বৃষ্টির পানি নদীতে নামতে পারছে না। উল্টো জোয়ারের সময় পানি শহরে ঢুকে জলাবদ্ধতা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।”

বেলার বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল জানান, “চার বছর আগে চিহ্নিত ৪৬০ জন খাল দখলদারকে উচ্ছেদে প্রশাসনের কোনো বাস্তব পদক্ষেপ দেখা যায়নি। আবার ময়ূর নদ খননের মাটি নদীর পাড়ে রাখায় তা আবার নদীতেই ফিরে যাচ্ছে।”

প্রশ্নবিদ্ধ ৮২৩ কোটি টাকার প্রকল্প

২০১৮ সালের নির্বাচনে এবং ২০২৩ সালের পুনর্নির্বাচনে মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের মূল প্রতিশ্রুতি ছিল খুলনার জলাবদ্ধতা নিরসন। তার মেয়াদে ৮২৩ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেও কার্যকর ফল মিলছে না।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজজামান বলেন, “গত চার দশকে সব মেয়রই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কিন্তু কোনো মেয়রই সমাধান দিতে পারেননি। পরিকল্পনা ছাড়া প্রকল্প গ্রহণ করলে taxpayer এর টাকাই অপচয় হয়।

এ বিষয়ে কেসিসির প্রধান প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান বলেন, “জলাবদ্ধতা নিরসন একটি চলমান প্রক্রিয়া। পাম্প স্টেশন ও স্লুইসগেট সংস্কার এখনো বাকি। এগুলো সম্পন্ন হলে সুফল আসবে।”

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ