প্রতিনিধি 4 July 2025 , 10:42:14 প্রিন্ট সংস্করণ
চার দশকের রাজনীতিতে অটল এক নেতার নাম ত্যাগ, সংগ্রাম, নির্যাতন আর কর্মপ্রচেষ্টায় গড়া মনিরামপুরের অভিভাবক শহীদ মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন
রিপন হোসেন সাজু, মনিরামপুর (যশোর)
একজন শহীদ মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন তিনি শুধু একজন রাজনীতিক নন, তিনি মনিরামপুরের ইতিহাস। যাঁর কর্ম, ত্যাগ ও আদর্শ তাকে করেছে একটি নাম নয়, একটি প্রতিষ্ঠান। প্রায় চার দশকের রাজনীতি, প্রতিটি পদক্ষেপেই জড়িয়ে আছে দলের প্রতি অনড় নিষ্ঠা ও জনসেবার এক গভীর চেতনা।
আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট শহীদ মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, পিতা প্রয়াত ডাক্তার মহিউদ্দিন সরদার এবং মাতা মোছাম্মৎ রাবেয়া বেগম। জন্মগ্রহণ করেন ১৯৬০ সালের ৯ মে, যশোর জেলার মনিরামপুরে। শিক্ষাগত যোগ্যতায় তিনি বি.এ. এবং এল.এল.বি ডিগ্রিধারী। শৈশব থেকেই ছিলেন সমাজ সচেতন, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের দায়িত্বে ছিলেন তিনি গ্রাম সরকার প্রধান, থানা সচিব, জাতীয় যুব সংস্থার জেলা সদস্য, ইউথ কমপ্লেক্সের সাধারণ সম্পাদকসহ আরও অনেক দায়িত্ব পালন করেন নিষ্ঠার সঙ্গে।
মাত্র ১৭ বছর বয়সে ১৯৮৪ সালে এলাকাবাসীর আহ্বানে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নির্বাচিত হন। এরপর একের পর এক দায়িত্বে থেকে প্রমাণ করেন, নেতৃত্ব তাঁর জন্মগত অধিকার নয় তা অর্জিত। তিনি মনিরামপুর সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৯৭ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত। পরে মনিরামপুর পৌরসভা গঠিত হলে তিনিই হন পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত মেয়র। ২০০৪ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত টানা দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
রাজনৈতিক জীবনের সূচনা ঘটে ১৯৭৯ সালে, যখন তার পিতা ডা. মহিউদ্দিন সরদার বিএনপির থানা সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হন। এরপর মরহুম আফসার আহমেদ সিদ্দিকীর হাত ধরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘটে তাঁর, এবং কো-অপ্ট করা হয় থানা বিএনপির সদস্য হিসেবে। শুরু হয় তাঁর আনুষ্ঠানিক রাজনৈতিক পথচলা।
১৯৯১ সালে তিনি হন থানা বিএনপির সহ-সভাপতি, ১৯৯৪ সালে সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০২ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন। এরপর মনিরামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন ব্যালটে ১৭টি ইউনিয়নের ১২০৭ জন কাউন্সিলরের রায়ে। সেই থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত টানা তিনবার উপজেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।
রাজনীতিতে নিষ্ঠাবান এই নেতার বিরুদ্ধে দায়ের হয় ৪৬টি মামলা, গ্রেফতার হন একাধিকবার। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে, ওয়ান ইলেভেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন বিরোধী আন্দোলন সবসময় ছিলেন সম্মুখ সারিতে। ১০০ দিন নিরাপত্তা আইনে ও ১১ মাস ওয়ান ইলেভেনে কারাভোগ করেন। তাঁর বাসা-বাড়ি, আত্মীয়স্বজন, এমনকি গৃহকর্মীরাও সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন তবুও কোনো দিন মাথা নত করেননি, আদর্শের সঙ্গে করেননি আপস।
তিনি কখনও কর্মীদের ত্যাগ করেননি, কঠিন সময়ে থেকেছেন পাশে। মনিরামপুর বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীকে আইনি সহায়তা দিয়ে সংগঠনের প্রতি তাদের আস্থা ধরে রেখেছেন। তিনি আজও মনে করেন দল ও আদর্শের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা নয়, লড়াই-সংগ্রামই রাজনীতির প্রকৃত পরিচয়।
আজ মনিরামপুরে প্রশ্ন উঠলেই একটাই উত্তর মেলে“এই মুহূর্তে শহীদ ইকবালের বিকল্প, শহীদ ইকবাল নিজেই।”