প্রতিনিধি 18 August 2025 , 6:45:43 প্রিন্ট সংস্করণ
ফয়সাল হায়দার,
স্টাফ রিপোর্টার।
মাগুরা জেলা প্রশাসক, শালিখা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শালিখা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, মাগুরা জেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা আর্মি কমান্ডার ক্যাম্প অফিস ও যশোর শিক্ষা বোর্ড অফিস চেয়ারম্যান বরাবর গত সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫ তারিখে অভয়াচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আর্থিক অনিয়ম এবং বিদ্যালয়ের পাঠদানের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি প্রসঙ্গে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে স্কুলের ১৪ জন শিক্ষক ও শিক্ষিকা বৃন্দগণ।
অভয়াচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শালিখা উপজেলার আড়পাড়া ইউনিয়নের বরইচারা গ্রামে অবস্থিত। বিদ্যালয়ের ১৪ জন শিক্ষকবৃন্দ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমতা রানী মজুমদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে বলেন, তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হওয়ার পর শিক্ষকদের উৎসাহ প্রদান করে বিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পাঠদানের পরিবেশ তৈরির পরিবর্তে বিভিন্ন অনিয়ম ও ভিতি প্রদর্শন করে আসতেছেন, ফলে শিক্ষকদের মনবল সম্পূর্ণরূপে ভেঙ্গে গিয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে ২০২৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত বিদ্যালয়ের নিম্ন লিখিত আয়ের অর্থ ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন এবং বর্তমানেও তা অব্যাহত রেখেছেন।
১। সরকার প্রদত্ত টিউশন ফিসের টাকা এ পর্যন্ত কখনও যথাযথভাবে ব্যয়ের কোনো হিসাব নেই এবং উক্ত টাকা তার স্বামী মনমথ শিকদার (প্রধান শিক্ষক, আসবা বরইচারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়) এর মাধ্যমেও উত্তোলন করেছেন।
২। ২০২৪ সালের ১৫ আগষ্ট সোনালী ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং অগ্রনী ব্যাংক থেকে ৬০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন যার ব্যয়ের সঠিক কোনো হিসাব নেই।
৩। FDR এর সঠিক তথ্য দিতে অস্বীকৃতি।
৪। জনতা ব্যাংকের সাধারণ তহবিলের জমাকৃত অর্থ সঠিকভাবে ব্যয় হয় না।
৫। বিগত বছর গুলোতে বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ আয়ের অর্থ ব্যাংকে আংশিক জমা দিয়ে বড় একটি অংশ আত্মসাৎ করেছেন।
৬। গত ২০১৯ সাল থেকে ২০২৫ সালের অধ্যবধি বিদ্যালয়ের আয়ের টাকা ও পুকুর ইজারার টাকার সঠিক হিসাব নেই।
৭। ৩ টি পুরাতন বিল্ডিং বিক্রির অর্থের হিসাব নাই।
৮। আনুমানিক ১০-১২ টি বড় মেহগনি গাছ বিক্রির অর্থের হিসাব নাই। যার গাছের গুড়ি গুলো এখনও স্কুলের মাঠ প্রাঙ্গণে দেখা যায়।
৯। প্রতি বছর শিক্ষকদের ভাতা বাবদ বেতন স্কেলের ১০% হারে বছরে ২ থেকে ৩ মাসের ভাতা প্রদান করেন অথচ বিদ্যালয়ে যে অর্থ আয় হয় তাতে ১২ মাসের ভাতা হয়েও বাড়তি থাকে।
১০। শিক্ষকদের সাথে প্রধান শিক্ষক সব সময় রুঢ় আচরণ করেন এবং স্বচ্ছতার কথা বলতে গেলেই চাকরি হারানোর ভয় দেখান ফলে শিক্ষকরা সব সময় আতংকে থাকেন যার কারণে বিদ্যালয়ের পাঠদানের সুষ্ঠু পরিবেশ সম্পূর্নরূপে ভেঙ্গে পড়েছে।
১১। বর্তমান সভাপতি (প্রধান শিক্ষকের দেবর) নিকট এ বিষয়ে আবেদন করেও কোনো সঠিক সমাধান আমরা পাইনি বরং সে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
১২। প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের কারণে সমাজ ব্যবস্থা উন্নতির পরিবর্তে সম্পূর্ণ রূপে ভেঙ্গে পড়েছে।
১৩। দীর্ঘ দিন ধরে প্রধান শিক্ষকের বিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারিতার কারনে বর্তমানে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি একে বারেই কমে গেছে।
১৪। সহকারী প্রধান শিক্ষককে না জানিয়ে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকেন।
১৫। প্রধান শিক্ষক কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের নিয়ে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে শিক্ষকদের বাদে বিদ্যালয় পরিচালনা করেন সেখানে শিক্ষকদের কিছু করার থাকেনা। যাহা বর্তমানেও অব্যাহত আছে।
১৬। আমরা আমাদের নিরাপত্তা নিয়েও সংকিত।
১৭। সর্বপরি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমতা রানী মজুমদারের প্রতি সকল শিক্ষকবৃন্দ চরম আস্থাহীনতায় ভুগছে।
সঠিক তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যালয়টিতে সুষ্ঠু পাঠদানের পরিবেশ সৃষ্টি করে দেওয়ার জন্য মাগুরা জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন সহ সরকারের দপ্তরের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করছেন শিক্ষকবৃন্দ- অভয়াচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মুকুল মন্ডল, ধর্ম সহকারী শিক্ষক মোঃ বাহাউদ্দিন শেখ, কৃষি বিজ্ঞানের শিক্ষক অনুৎ জোয়ারদার, শিক্ষক প্রতিনিধি আজিজুল হক, হিন্দু ধর্ম শিক্ষক মালতী শিকদার, ব্যবসায় শিক্ষা শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র আদিত্য, শিক্ষক অসীম মজুমদার, বিজ্ঞান শিক্ষক ইন্দ্রজিৎ রায়, সমাজ বিজ্ঞান শিক্ষক রেনুবালা, ইংরেজি শিক্ষক বছির আহমেদ, গ্রন্থাগার শিক্ষক স্মৃতি রানী বিশ্বাস, সমাজবিজ্ঞান শিক্ষক অর্চনা রানী সরকার, সমাজ-বিজ্ঞান শিক্ষক কেয়া বর ও আইসিটি শিক্ষক মোস্তফা খালিদ হাসান।
সংযুক্তি: ১। সভাপতির নিকট আবেদন কপি। ২। টিউশন ফিসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট। ৩। জনতা ব্যাংকের সাধারণ তহবিলের স্টেটমেন্ট (আংশিক)
অভয়াচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক মমতা মজুমদার গত ১ আগস্ট ২০১৭ সাল হইতে অদ্যাবধি দায়িত্বে আছেন।
এবিষয়ে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের আমলনামা গুলোর বিস্তারিত ঘটনা শুনতে গেলে তিনি বলেন আমি এখন বিদ্যালয়ে নেই খেলাধুলার সামগ্রী কিনতে আড়পাড়ায় আসছি এরপর মাগুরা শহরে যাবো। এখন আসার সময় নেই বি দ্যালয়ে এই বলে কল কেটে দেন।