অন্যান্য

নির্বাচন কমিশন আয়োজিত গণশুনানিতে হামলার  প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন সর্বদলীয় ঐক্য সংগ্রাম কমিটি।

  প্রতিনিধি 26 August 2025 , 9:30:37 প্রিন্ট সংস্করণ

স্টাফ রিপোর্টার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) সংসদীয় আসন থেকে বিজয়নগর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নকে কেটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সঙ্গে যুক্ত করার নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ‘অখন্ড বিজয়নগর উপজেলা রাখার দাবীতে সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি’।
এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং বিজয়নগরকে অখন্ড রাখার দাবিতে এরই মধ্যে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয়রা
গত ২৫ আগস্ট, সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোঃ ইমাম হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবাদ জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,
গত ৩০ মে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের এক প্রজ্ঞাপনে বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা, বুধন্তি ও হরষপুর ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসন থেকে বাদ দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক ও জনবিরোধী আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছে কমিটি।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৪ আগস্ট নির্বাচন কমিশন আয়োজিত গণশুনানিতে ‘অখন্ড বিজয়নগর উপজেলা রাখার দাবীতে সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি’র পক্ষে আবেদনকারীরা তাদের যুক্তি তুলে ধরেন। অপরদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সঙ্গে ইউনিয়নগুলোকে যুক্ত করার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
রুমিন ফারহানা শুনানিতে দাবি করেন যে, চান্দুরা, বুধন্তি ও হরষপুর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের জমির খাজনা, জমা-খারিজসহ বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজের জন্য সরাইল উপজেলায় যেতে হয়। তিনি আরও বলেন, এই তিন ইউনিয়ন থেকে বিজয়নগর উপজেলা সদরের যাতায়াত দূরত্ব দুই ঘণ্টার, যেখানে সরাইল সদরে যেতে মাত্র ১৫-২০ মিনিট সময় লাগে।
সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি ব্যারিস্টার ফারহানার এই বক্তব্যকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ বলে অভিহিত করেছে। কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ইমাম হোসেন বলেন, “চান্দুরা, বুধন্তি ও হরষপুর ইউনিয়ন থেকে বিজয়নগর উপজেলা সদরে পৌঁছাতে মাত্র ১০-১৫ মিনিট সময় লাগে।
তিনি আরও যোগ করেন, “বিজয়নগরের ভৌগোলিক, প্রশাসনিক ও জনবিন্যাসগত স্বার্থ উপেক্ষা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা স্থানীয় জনগণের প্রতি অবিচার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও অভিযোগ করা হয়, গণশুনানিতে ব্যারিস্টার ফারহানার বক্তব্যের প্রতিবাদ করায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের বাইরে তার “ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী গুন্ডাবাহিনী” ‘অখন্ড বিজয়নগর উপজেলা রাখার দাবীতে সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি’র অন্যতম নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ এনামুল ইসলামসহ সাধারণ জনগণের ওপর হামলা চালায়।
এই “বর্বরোচিত” ও “ন্যক্কারজনক” ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সংগ্রাম কমিটি। শুনানিতে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে, যা একপর্যায়ে নির্বাচন ভবনের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে।
সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি জানিয়েছে, বিজয়নগরবাসীর স্বার্থবিরোধী এই সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। অ্যাডভোকেট ইমাম হোসেন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হবে।”
উল্লেখ্য, এই আসন পুনর্বিন্যাসের খসড়া তালিকা প্রকাশের পর থেকেই স্থানীয় জনগণ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। তাদের দাবি, প্রায় দুই লক্ষাধিক ভোটার নিয়ে বিজয়নগর একটি স্বতন্ত্র সংসদীয় আসনের দাবিদার হলেও বছরের পর বছর ধরে এটিকে বিভিন্ন আসনের সঙ্গে যুক্ত করে অবহেলিত করে রাখা হয়েছে।

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ