অন্যান্য

নারী কেলেঙ্কারি জানাজানি পলাতক পরিচালক।

  প্রতিনিধি 31 August 2025 , 11:29:53 প্রিন্ট সংস্করণ

 নিজাম উদ্দীন 
কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ হেলিশ রঞ্জন সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন যাবত হাসপাতালের নারী কর্মচারীর সাথে অনৈতিক সম্পের্ক ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের গুঞ্জণ থাকলেও দীর্ঘদিন পর ভুক্তভোগী এক নারী তা প্রকাশ করেছেন।
 বুধবার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় তার নিজ বাড়িতে ওই নারী ডাঃ হেলিশ রঞ্জনের সাথে অনৈতিক সম্পর্কের বিষয় নিয়ে সাংবাদিক ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সামনে কথা বলেন।
অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ে প্যাথলজি ডিপার্টমেন্টের ক্যাশ কাউন্টারে চাকরি করছি। হাসপাতালটির বর্তমান পরিচালক ডাঃ হেলিশ রঞ্জন সরকার প্রায় সময় আমাকে তার অফিস কক্ষে ডেকে পাঠাতেন। যাওয়ার পর কিছু জিজ্ঞেস করলে বলে চলে যাও। এভাবে মাঝে মাঝে আমাকে ডাকতো। আমাকে চাকরির ভয় ও প্রলোভন দেখিয়েছে। বলেছে তুমি তো অনেক সুন্দর, অমুক-তমুক। দুইবার আমাদের বাড়ি পর্যন্ত আসছে। আসার পর বলেছে তোমাকে অনেক ভালো লাগে আমার যে স্ত্রী আছে উনি তো বেশি সুবিধা না আমাকে অনেক কষ্ট দেয়। ২৮ বছর ধরে আমি অনেক ভুগতেছি। আমাকে কষ্ট দেই, ব্যবহার ভালো না, আমার সেবা করে না, বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হবে। আমি প্রয়োজনে ধর্ম ত্যাগ করবো, ধর্ম কোন ব্যাপার না, আমি এসব মানি না তুমি তোমার ধর্ম পালন করবা। তোমাকে আমি প্রয়োজনে কোটি টাকা দিয়ে আটকাবো। আমি চারপাশে তোমাকে ঘিরে ধরবো। প্রয়োজনে কোটি টাকা কাবিন দিয়ে বিয়ে করবো এমনকি বাসা বাড়ি সবকিছু করে দিবো। তুমি রাজি হয়ে যাও।
ভুক্তভোগী ওই নারী আরও বলেন, আমি যেহেতু একজন আউটসোর্সিংয়ের কর্মচারি উনি একজন পরিচালক তার কথা যদি না শুনি চাকরিটা থাকবে না বলে আমাকে এই ধরনের হুমকি দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই না বন্দুকের হুমকি দেওয়া হয়েছে। বলেছে আমার কাছে রেজিস্ট্রার করা বন্দুক আছে আমি যেকোন সময় যে কাউকে মারতে পারি, মারাতেও পারি। কোন বিষয় না। আমার কিন্তু ডিসির উপরে ক্ষমতা আছে। যার ফলে আমি কিন্তু অনেক কিছু করতে পারি। আমি যেন আমার স্বামীকে ডিভোর্স দেই সেই জন্য আমাকে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা দিয়েছে। মাঝে মাঝে আমার মোবাইল নাম্বারে বিকাশের মাধ্যমে রিচার্জ দিয়েছে, হাত খরচের জন্য ১ হাজার টাকা। রিচার্জ করে আমাকে জানাতো। আমার কিছু করার ছিল না। আমাকে মাঝে মাঝে ডিউটিরত অবস্থায় ফোন দিয়ে বলতো আমি একরামপুর আছি আস ঘুরতে যাওয়ার জন্য। যাওয়ার পর এপেক্স শুরুমে নিয়ে যেত। আর না গেলে আমাকে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি মানসিক টর্চার করতো। যার ফলে আমি ডিউটি করতে পারি নাই অনুপস্থিত থাকতে হতো। আমার স্বামীকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতো আর এ কারণে মাঝে মাঝে মিথ্যা বলতাম যে স্বামীকে ছেড়ে দিছি। তা না হলে চাকরিটা থাকবে না। আর এসব কিছু অনেক দিন ধরে ভুগতেছি কারও কাছে বলতে পারছি না। উনার মতো মানুষ আমাকে বিয়ের অফার দিয়েছে। উনি একজন হিন্দু মানুষ, একজন পরিচালক আমার যাওয়ার কোন রাস্তা নেই। আমি এলএলবিতে পড়াশোনা করছি। একদিন শুক্রবার ক্লাসে আমার ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার সময় আমাকে ফোন দিয়ে তার কোয়ার্টারে যেতে বলে। ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার পর ছেলেকে কিছু খাবার দিয়ে পাঁচশত টাকা দিয়ে বলে তুমি ওকে নিয়ে একটু ঘুরেফিরে আস। পড়ে আমি চলে আসছি। আমি যদি কোন কিছু বলি তাহলে চাকরি থাকবে না। উনার স্ত্রী একদিন আমাদের বাড়িতে এসে চিৎকার চেঁচামিছি করেছে, গালিগালাজ করেছে, এলাকার অনেক মানুষকে জড়ো করেছে। আমার মানসম্মান আর কিছু নাই। তবে আমি এতোদিন পরে হলেও সত্যিটা বলতে পাড়ায় ভালো লাগছে। আমি তার বিচার চাই।
ওই নারী আরো বলেন, বিভিন্ন জাতীয় দিবসে সরকারি হাসপাতালে টিকেট বিনামূল্যে দেওয়ার কথা থাকলেও ডাঃ হেলিশ রঞ্জন সরকার টাকার বিনিময়ে টিকেট বিক্রি করতে বাধ্য করে। এবং টিকেট বিক্রির সকল টাকা তিনি নিজে আত্মসাৎ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ হেলিশ রঞ্জন সরকারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার সাথে সাথে পরে কথা বলছি বলে ফোন রেখে দেন। পরবর্তীতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ অভিজিত শর্ম্মা সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমার কাছে কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ