প্রতিনিধি 1 September 2025 , 3:00:42 প্রিন্ট সংস্করণ
এগিয়ে লুক্সেমবার্গ, ডেনমার্ক-নেদারল্যান্ডস-যুক্তরাজ্যে কেমন?
উচ্চশিক্ষা ও সংস্কৃতি বিনিময়ের জন্য ইউরোপ বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় গন্তব্য। বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নে দেশগুলোতে প্রায় ১৭ লাখ ৬০ হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। এ সংখ্যা এসব দেশের মোট শিক্ষার্থীদের ৮ দশমকি ৪ শতাংশ।
ইউরো নিউজের খবরে বলা হয়েছে, বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় থাকা দেশগুলো, যেমন যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও নেদারল্যান্ডস শিক্ষার্থীদের আকর্ষণের জায়গা। কাজের সুযোগ, ভিসা-পরবর্তী নীতিমালা, সাংস্কৃতিক সামঞ্জস্য, ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা, নিরাপত্তা ও জীবনমানও শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্তে বড় ভূমিকা রাখে।
এসব দেশে পড়তে আসা বা পড়তে যেতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের মধ্য বড় একটি প্রশ্ন থাকে—পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করার সুযোগ কেমন, অর্থাৎ কাজ করা যাবে কি না? উত্তর হলো—হ্যাঁ। এর মধ্য কোন কোন দেশে কাজের অনুমতি লাগে আর কোনটিতে লাগে না?
ইউরোপের ৩০টি দেশে উচ্চশিক্ষায় পড়াশোনা করা।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা কাজ করতে পারেন। এর মধ্যে কয়েকটি দেশে কোনো ওয়ার্ক পারমিট (কাজের অনুমতি পত্র) লাগে না। এই ৩০টি দেশের মধ্য ১৪টি দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওয়ার্ক পারমিট লাগে না।
দেশগুলো হলো যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, পর্তুগাল, বুলগেরিয়া, রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়া। এসব দেশ শিক্ষার্থীদের কাছে বিশেষভাবে আকর্ষণীয়। কারণ, দ্রুত কাজ শুরু করা যায় কোনো বাড়তি কাগজপত্র ছাড়াই।
এর মানে প্রায় ৭৫ শতাংশ বিদেশি শিক্ষার্থীকে ওয়ার্ক পারমিট নিতে হয় না।
অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, গ্রিস ও ইতালিতে শুধু ইইউ/ইইএর বাইরে থেকে আসা শিক্ষার্থীদের ওয়ার্ক পারমিট নিতে হয়। চেকস্লোভাকিয়া ও ক্রোয়েশিয়ায় ক্ষেত্রবিশেষে পারমিট লাগতে পারে।
অন্যদিকে আটটি দেশ বাধ্যতামূলকভাবে ওয়ার্ক পারমিট চায়। এগুলো হলো স্পেন, নেদারল্যান্ডস, স্লোভেনিয়া, নরওয়ে, মাল্টা, লুক্সেমবার্গ, আইসল্যান্ড ও সাইপ্রাস।
স্টাডিজইনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টম মিসেন ইউরো নিউজ বিজনেসকে বলেন, ‘ইউরোপীয় দেশগুলোতে পড়াশোনা এবং কাজ করার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্তগুলো অনেক সময় জটিল হয়ে যায়।
শিক্ষার খরচ ও জীবনযাত্রার ব্যয় সবচেয়ে বড় বিবেচ্য বিষয়।’কত ঘণ্টা কাজ করা যায়?
বেশির ভাগ দেশে শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে পারেন। তবে লুক্সেমবার্গে সীমা ১৫ ঘণ্টা আর নেদারল্যান্ডসে ১৬ ঘণ্টা।
গ্রীষ্মকালীন ছুটি বা একাডেমিক বিরতিতে অনেক দেশে শিক্ষার্থীরা পূর্ণকালীন কাজও করতে পারে।
ঘণ্টাপ্রতি আয়—
গবেষণা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের আনুমানিক ঘণ্টাপ্রতি আয়ে পিছিয়ে বুলগেরিয়া€৩ দশমিক ৩২ ইউরো একজন শিক্ষার্থী আয় করতে পারেন। এরপরে আছে হাঙ্গেরি ৪.১৯ ইউরো, এস্তোনিয়া ৪.৩০ ইউরো, লাটভিয়া ৪.৪৭ ইউরো, স্লোভাকিয়া ৪.৬৯ ইউরো।
ঘণ্টাপ্রতি আয়ে সবার চেয়ে এগিয়ে লুক্সেমবার্গ। দেশটির শিক্ষার্থীরা ১৮ ইউরো আয় করেন প্রতি ঘণ্টায়। এরপরে আইসল্যান্ড ১৬ থেকে ১৮ ইউরো। অন্য উচ্চ আয়ের দেশের মধ্য নরওয়েতে ১৬.৮৬ ইউরো, ডেনমার্কে ১৪.৭৪ ইউরোপ, নেদারল্যান্ডসে€১৪.৪০ ইউরো, যুক্তরাজ্য ১৪.০৯ ইউরো।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর হার কোন দেশে কত
ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ইউরোপে গড়ে ৮.৪ শতাংশ শিক্ষার্থী বিদেশ থেকে এসেছেন। সর্বোচ্চ লুক্সেমবার্গ (৫২.৩%), মাল্টা (২৯.৬%), সাইপ্রাস (২২.৩%)। সর্বনিম্ন: গ্রিস (৩%), ক্রোয়েশিয়া (৩.৭%), স্পেন (৪.৩%)।
সংখ্যার দিক থেকে—
যুক্তরাজ্যে সবচেয়ে বেশি: ৭ লাখ ৩২ হাজার (২৩%)। ইইউ দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে জার্মানি ৪ লাখ ২০ হাজারের বেশি। এরপর ফ্রান্স (২.৭৬ লাখ), ইতালি (১.০৬ লাখ), স্পেন (১.০২ লাখ) শিক্ষার্থী।