অন্যান্য

বাংলাদেশী ২০ জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি

  প্রতিনিধি 7 November 2024 , 5:26:24 প্রিন্ট সংস্করণ

জামাল উদ্দীন:-

কক্সবাজারের টেকনাফে গত ৫ নভেম্বর নাফ নদীর মোহনা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার করতে গিয়ে মিয়ানমার বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হাতে অপহৃত হওয়া বাংলাদেশের দক্ষিণ সীমান্ত এলাকা টেকনাফের ২০ জেলেকে ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছে সীমান্ত প্রহরী বিজিবি সদস্যরা।

 

এদিকে আরাকান আর্মির হাতে আটক থাকা অসহায়‌ জেলেদের ফেরত না দেওয়ার কারণে জেলে পরিবারের মধ্যে দেখা দিয়েছিল উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা।

 

পাশাপাশি সংঘটিত ঘটনার পর থেকে সীমান্ত প্রহরী টেকনাফ ২ বিজিবি সদস্যরা স্থানীয় জেলেদের অক্ষত অবস্থায় ফেরত আনতে ওপার সীমান্তের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সাথে যোগাযোগ তৎপরতা বৃদ্ধি করতে থাকে।

 

অবশেষে টেকনাফ সীমান্ত প্রহরী ২ বিজিবির সার্বিক সহযোগিতায় ৭ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) বিকালের দিকে অত্র উপজেলার অন্তর্গত শাহপরীরদ্বীপ জেটি ঘাঁট দিয়ে ২০ জেলেকে ফেরত আনতে সক্ষম হয়।

 

এ বিষয়ে টেকনাফ ২ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ সময়ের কন্ঠস্বরকে সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মিয়ানমারে ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেদেরকে অক্ষত অবস্থায় ফেরত আনার জন্য মিয়ানমার সংশ্লিষ্ট বাহিনীর সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছিলাম। কেন তাদেরকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল সে বিষয়েও জোর প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম।

 

অবশেষে দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট থাকার সুফল হিসেবে ২০ জেলেকে আমরা ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছি বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

 

এরপর তারা জানিয়েছেন আমাদের জেলেরা তাদের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করছিল। উক্ত অপরাধে তারা তাদেরকে ধরে নিয়ে গেছে।

 

ফেরত আসা জেলেরা সবাই, টেকনাফ উপজেলা সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা। এরা হচ্ছে-মো.হাসিম (৩০), মো.হোসেন (২০), মহি উদ্দিন (২২), এনায়েত উল্লাহ (৩২), আব্দুল শুক্কুর (৩৫), নুর হাফেজ (২২), মো. ইয়াছিন (৩০), আবদুর রহিম (২৪), হাসান আলি (৩৩), ওসমান গনি (৩০), শাহ আলম (২২), আসমত উল্লাহ (২০), আব্দুল শুক্কুর (২৬), আবুল হোসেন (১৭), আয়ুব খান (৩০), নুর হোছন (২২),মো. বেলাল (১৮), সলিম (২৭), আবদুল কাদের (২২) ও ইবনে আমিন (৩৫)।

 

আরাকান আর্মির হাতে অপহরণের শিকার হওয়া জেলে পরিবারের সদস্যরা সময়ের কন্ঠস্বরকে জানিয়েছেন ‘তাদের ধরে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে আমরা সবাই উদ্ধেগ আর উৎকণ্ঠা নিয়ে তারা কখন ফিরে আসবে সে অপেক্ষার প্রহর গুনেছিলাম।

 

এ ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী সময়ের কন্ঠস্বরকে বলেন, জেলেদের ভূলের কারণে বারবার এ ধরনের ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। তবে আমাদের সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট বাহিনীর সদস্যরা যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় সদা জাগ্রত রয়েছে।

 

তারেই ধারাবাহিকতায় সীমান্ত প্রহরী বিজিবি সদস্যদের সঠিক তৎপরতার অব্যাহত রাখার কারণে স্বল্প সময়ের মধ্যে আমরা এই ২০ জেলেকে ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছি। ফেরত আসা জেলেদের তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

 

পাশাপাশি টেকনাফের নাফ নদীতে দীর্ঘ দিন ধরে মাছ শিকার বন্ধ রয়েছে। তবুও জেলেরা সেই নির্দেশ অমান্য করে মাছ শিকারে যাচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে সর্ব প্রথম স্থানীয় জেলেদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভুমিকা পালন করতে হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

 

উল্লেখ্য, গত ৬ অক্টোবর টেকনাফের শাহপরী দ্বীপ জেটি ঘাট এলাকা দিয়ে গভীর সাগরে মাছ শিকারে বের হয় ছয়টি ট্রলারসহ ৫৮ জন জেলে এবং মাঝিমাল্লা। ঠিক একই নিয়মে তাদের গত ৯ অক্টোবর অপহরণ করে সে দেশের নৌবাহিনী।

 

উক্ত সময়ে মিয়ানমার নৌবাহিনীর টহলরত একটি স্পিড বোট থেকে বাংলাদেশি একটি ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলিও ছোঁড়া হয়েছিল। তাদের ছোঁড়া গুলিতে তিন জেলেও গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। সে দিনের ঘটনায় ঘটনাস্থলে এক জেলে মারা গিয়েছিল। এরপর সীমান্ত প্রহরী টেকনাফ ২ বিজিবির সার্বিক সহযোগিতায় ওপারে আটক থাকা জেলেদের জেলেদের ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছিল

Author

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ