অন্যান্য

পাট বীজ উৎপাদনে সালথার কৃষক মুক্তার মোল্যার সাফল্য

  প্রতিনিধি 9 November 2024 , 2:32:12 প্রিন্ট সংস্করণ

 

সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:

দেশের মধ্যে পাট উৎপাদনের জন্য ফরিদপুর জেলা অন্যতম। সেই ফরিদপুর জেলার সালথা উপজেলায় প্রতিবছর অন্তত ১২ হাজার থেকে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়। কিন্তু পাট উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশে পাটের বীজ পাওয়া যায় না বলেই চলে। এখানকার কৃষকরা সবাই ভারতীয় বিভিন্ন জাতের বীজ বপন করে পাট আবাদ করে থাকেন। তবে গত চার বছর ধরে সালথা উপজেলা সদরের কৃষক মুক্তার মোল্যা নিজের উৎপাদিত দেশীয় বীজ দিয়ে পাট আবাদ করে আসছেন।

 

তার এই সাফল্যের ফল হিসেবে জেলার শ্রেষ্ঠ কৃষি উদ্যোক্তা নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এরই ধারবাহিকতায় এবারো তিনি ৪০ শতাংশ জমিতে পাটের বীজ আবাদ করেছেন।

 

শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকালে দেশীয় পাটের বীজ উৎপাদনের বিষয় নিয়ে কথা হয় কৃষি উদ্যোক্তা মো. মুক্তার মোল্যার সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাদের এলাকার কৃষকরা ভারতীয় নানা জাতের বীজ দিয়ে পাট আবাদ করেন।

 

তবে আমি গত চার বছর ধরে সবুজ সোনা-৯ নামে বীজ উৎপাদন করে আসছি। গত বছর ৫০ শতাংশ জমিতে পাটের বীজ আবাদ করেছিলাম। এতে আমার খরচ হয়েছিল ১০ হাজার টাকা। ওই জমি থেকে আমি অন্তত ২০০ কেজি বীজ পেয়েছিলাম।

 

তিনি বলেন, নিজের উৎপাদিত সেই বীজ দিয়ে গত বছর আমি ১৪ বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছিলাম। ১৪ বিঘা জমিতে আমার ১৪ কেজি বীজ লেগেছিল। আমার উৎপাদিত একটা বীজও নষ্ট হয়নি। প্রতিটা বীজ থেকে পাট গাছের জন্ম হয়েছে। ফলনও হয়েছে ভালো।

 

বাকি ১৮৬ কেজি বীজ বিক্রি করে ১৮ হাজার ৬০০ টাকা আয় করেছি। তাতে আমার নিজের ১৪ বিঘা জমির প্রয়োজন মিটিয়েও ৮ হাজার টাকা লাভ হয়েছে।

 

তিনি আরো বলেন, প্রতিবিঘা জমিতে ২ কেজি করে ভারতীয় বীজ লাগে। আবার অনেক বীজ নষ্টও হয়ে যায়। কিন্তু আমার উৎপাদিত ১ কেজি বীজ দিয়ে এক বিঘা জমিতে পাট আবাদ করা যায়। বপন করার পর একটা বীজও নষ্ট হয় না। ফলনও ভারতীয় বীজের চেয়ে ভালো হয়। এবারও আমি ৪০ শতাংশ জমিতে পাটের বীজ আবাদ করেছি। ইতিমধ্যে পাটের গাছ থেকে ফুল আসতে শুরু করেছে। আশা করি, ওই ৪০ শতাংশ জমি থেকে এবারো ১৫০ থেকে ১৬০ কেজি বীজ পাবো। আমার মতো অন্য কৃষকরা যদি নিজে বীজ উৎপাদন করে পাটের আবাদ করেন, তাহলে তারা লাভবান হবেন বলে আমি মনে করি।

 

সালথা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুদর্শন সিকদার বলেন, পাট গবেষণা থেকে বীজ এনে কৃষক মুক্তার মোল্যা পাটের বীজ উৎপাদন করছেন। সালথায় ইতিমধ্যে এই বীজের জনপ্রিয়তা অনেকটা বেড়েছে। যদিও ভারতীয় বীজের চেয়ে দেশীয় এই বীজের চাহিদা কম। তবে কৃষকরা যদি নিজেরা বীজ উৎপাদন করে, তাহলে তাদের খরচ কম হবে। আবার ফলনও ভালো পাবে। মুক্তার মোল্যার মতো অন্য কৃষকরা যদি পাটের বীজ উৎপাদনে এগিয়ে আসেন, তাহলে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ