অন্যান্য

কলাপাড়ায় সবজিখ্যাত গ্রাম নীলগঞ্জ, প্রতিদিন দুই লাখ টাকার লাউ বিক্রি

  প্রতিনিধি 18 November 2024 , 7:25:17 প্রিন্ট সংস্করণ

সৈয়দ রাসেল, কলাপাড়া( পটুয়াখালী)

কলাপাড়ার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা বাজারে প্রতিদিন প্রায় দুই লাখ টাকার লাউ বিক্রি হয়। যা স্থানীয় কৃষকরা তাদের নিজস্ব জমিতে উৎপাদন করে এবং একটি ইউনিয়ন বাজারে বিক্রি করে পটুয়াখালী জেলার চাহিদা মিটিয়ে থাকে। এখানে দেশের বিভিন্ন যায়গার পাইকাররা এসে ক্রয় করে নিয়ে যায়।

পাখিমারা বাজারের আল্লাহর দান সবজি আড়ৎদার মালিক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, সবজিখ্যাত গ্রাম কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কুমির মারা গ্রাম। এ গ্রামের ৮০ শতাংশ মানুষ কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত। তাদের উৎপাদিত সবজি স্থানীয় বাজারে পাইকারিভাবে বিক্রি হয়। এখানকার সবজির কদর এখন দেশ জুড়ে। ফজরের পর পরই স্থানীয় পাইকাররা আড়ৎ এ এসে হাজির হয়। স্থানীয় কৃষকরা আড়ৎ এ সবজি নিয়া আসলেই শুরু হয় হাকডাক। ডাকের মাধ্যমে ১থেকে দেড় ঘন্টায় প্রায় ২ দুই লাখ টাকার শুধুই লাউ বিক্রয় হয়।

তুলনামূলক শ্রম ও ব্যয় কম হওয়ায় লাউ চাষে ঝুকছে লাউচাষিরা। লাউসহ নতুন নতুন সবজিচাষে কৃষকদের আগ্রহী করে তুলতে পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা দিচ্ছেন কলাপাড়া উপজেলা কৃষি বিভাগ।

লাউ চাষি মো. তাইয়্যেবুর রহমান বলেন, আমি এ বছর ৩০ হাজার টাকার লাউ উৎপাদনে ব্যয় করেছি। এ বছর কমপক্ষে ২ লাখ টাকা আয় হবে আমার। পরিশ্রম কম ও রোগ বালাই কম হওয়ায় এবারে লাউ চাষ করছি। প্রতিদিন সকালবেলা লাউ গাছ থেকে কেটে পাখিমারা বাজারের আড়ৎ এ নিয়া বিক্রি করে দেই। এতে আমার সময়ও বাঁচে।

আমিরাবাদ গ্রামের মো. কাওসার বলেন, ৩০ শতকে লাউ চাষ করছি। খরচ বাদে ৬০ হাজার টাকা আয় করতে পারব। এবারে লাউয়ের উৎপাদন অনেক ভালো। আমাদের লাউ পাখিমারা বাজারে পাইকারি বিক্রি করে দেই।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্তুপে স্তুপে লাউ রাখা। এসব লাউ কুমিরমারা, আমিরাবাদ, নাওভাঙ্গাসহ স্থানীয় গ্রাম থেকে নিয়ে এসেছে কৃষকরা। পাইকাররা যে যার মত ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় কৃষকরা যে যার মত করে আড়ৎ এ লাউ নিয়া আসছে। বর্তমানে লাউভেদে ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। বাজারে দাম ভালো পেয়ে বেশ খুশি স্থানীয় কৃষকরা।

কৃষক মো. জাকির বলেন, হাইব্রিড ও দেশীয় গোল জাতের লাউ চাষ করেছি। লাউয়ের বাম্পার ফলন হয়েছে। দেশের নানা প্রান্তে পাঠানো হয় এখানকার লাউ। সারা বছরই সবজি চাষে ব্যস্ত থাকি আমরা। পাখিমারা বাজারে আমরা পাইকারি দিয়ে দেই। ঐখান থেকে দেশের বিভিন্ন যায়গায় পাঠানো হয় লাউ।

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আরাফাত হোসাইন বলেন, অন্যান্য সবজির মধ্যে লাউ বেশ জনপ্রিয় সবজি। নীলগঞ্জ ইউনিয়নের উৎপাদিত সবজি জেলার চাহিদা মিটিয়েও দেশের নানা প্রান্তের চাহিদা মিটিয়ে থাকে। লাউ ছাড়াও নানা ধরনের সবজির চাহিদা রয়েছে এখানকার। এটিকে আমরা সবজিখ্যাত গ্রাম বলে থাকি।

আরও খবর

শ্রীপুরে ঝাড়ু বিক্রেতার একমাত্র সম্বল গাভী বিক্রি করে ঘুষ নিলেন সমাজপতিরা!

গোয়ালন্দে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধনের অভিযোগ উঠেছে

যশোরসহ সারাদেশে মাদকের শীর্ষ গডফাদার যারা

একটা কিনলে অন্যটা কেনার টাকা থাকে না ঝিনাইদহ প্রতিনিধি চার সদস্যের পরিবার নিয়ে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ঋষিপাড়ায় থাকেন ফজলুল রহমান। ভ্যান চালিয়ে দিনে আয় করেন ২৫০-৩০০ টাকা। এর অর্ধেক চলে যায় কিস্তি দিতে। বাকি টাকায় দৈনন্দিন সংসার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। গত বৃহস্পতিবার সকালে ফজলুর হরিণাকুণ্ডুর একটি দোকানে ডিম কিনতে এসেছিলেন। দাম শুনেই তিনি হতবাক। প্রতি হালি ডিমের দাম চাওয়া হচ্ছে ৫৬ টাকা। ফজলুর লোকমুখে শুনেছেন, সরকার ডিমের দাম কমিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দাম এত বেশি কেন? জিজ্ঞেস করতেই দোকানি বলেন, ‘নিলে নেন, না হলে অন্যখানে যান।’ পকেটের অবস্থা ভালো ছিল না ফজলুরের। বাধ্য হয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন তিনি। এর আগে গিয়েছিলেন স্থানীয় কাঁচাবাজারে। শাকসবজিসহ সব পণ্যের অস্বাভাবিক দামে হতাশা ঘিরে ধরে তাঁকে। আয়ের সঙ্গে খরচের হিসাব মেলাতে পারছিলেন না। ফজলুর রহমান বলেন, ১৫ দিন আগেও প্রতি পিস ডিমের দাম ছিল ১২ টাকা। এখন সেটার দাম কোথাও ১৩ টাকা ৫০ পয়সা আবার কোথাও ১৪ টাকা। হালিতে এই ১৫ দিনের ব্যবধানে ডিমের দাম বেড়েছে ৬-৮ টাকা। শাকসবজি, মাছ, আলু, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচসহ সবকিছুর দামই বেড়েছে। এভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়তে থাকলে সীমিত আয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। ২৫০-৩০০ টাকা আয়ের মধ্যে ঋণ নিয়ে কেনা ভ্যানের কিস্তির জন্য দিতে হয় ১৫০ টাকা। বাকি ১০০-১৫০ টাকায় চাল, ডাল, তেল আর তরিতরকারি কেনা যায় না। একটা কিনলে অন্যটা কেনার টাকা থাকে না। কাঁচাবাজারে কেনাকাটা করতে এসেছিলেন সাগর হোসেন। তিনি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত। হরিণাকুণ্ডু পৌরসভার শুড়া এলাকায় থাকেন স্ত্রী, দুই সন্তান ও মা-বাবা নিয়ে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে ছয় সদস্যের সংসারে খরচ চালাতে হিমশিম অবস্থা তাঁর। সাগর বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে সবকিছুর দাম বেড়েছে। কোনো কোনো পণ্যের দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তিনি। ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে ১৫ অক্টোবর সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তর মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। উৎপাদক পর্যায়ে ১০ টাকা ১৯ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরায় ১১ টাকা ৮৭ পয়সা প্রতি পিসের ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয়। বুধবার থেকে এ দামে ডিম বিক্রির কথা থাকলেও বাজারের চিত্র ভিন্ন। একেক জায়গায় একেক রকম দাম নেওয়া হচ্ছ। উপজেলা শহরের কোথাও ১৩ টাকা ৩৩ পয়সা, কোথাও ১৩ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের বাজারে ১৪ টাকা করে। লাগামহীন ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দামও। বাজারভেদে প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকায়। সোনালি মুরগি ২৮০-৩০০ টাকা কেজি। বৃহস্পতিবার সকালে শহরের কাঁচাবাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হয় ২৮০-৩২০ টাকায়। পেঁয়াজের কেজি ১২০ টাকা। লাউ পিস ৫০-৬০ টাকা, আলুর ৬০ টাকা কেজি। ৩০ টাকার মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। ৪০ টাকার কাঁচাকলা ৬০ টাকা। ৪০ টাকার শসা বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। গত সপ্তাহের চেয়ে এদিন ঢ্যাঁড়শের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ টাকায়। প্রতি কেজি পেঁপে ৩০ টাকা থেকে হয়েছে ৪০-৫০ টাকা। বেগুন বিক্রি হতে দেখা গেছে ১৩০-১৫০ টাকায়। ৫০ টাকার নিচে বাজারে সবজি মিলছে না। ব্যবসায়ীদের দাবি, সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। কাঁচাবাজারের বিক্রেতা খাইরুল ইসলামের ভাষ্য, কয়েকদিন আগে টানা বৃষ্টি হয়েছে। তা ছাড়া অনেক এলাকায় বন্যা হচ্ছে। মানুষের সবজি ও কাঁচামালের ক্ষতি হয়েছে। এতে সরবরাহ কম। তাই সব কিছুর দাম বেড়েছে। দাম কমাতে হলে আগে আড়তদারদের নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানান পাইকারি বিক্রেতা আব্দুল খালেক। তিনি বলেন, আড়ত থেকে কিনে সামান্য লাভে বিক্রি করেন। হরিণাকুণ্ডু উপজেলা মোড়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে আশরাফুল ইসলামের। তাঁর দাবি, খামারির কাছ থেকেই প্রতি পিস ডিম কিনতে হয় ১৩ টাকা ২০ পয়সায়। এর সঙ্গে পরিবহন খরচ রয়েছে। খুচরায় বিক্রি করছেন ১৩ টাকা ৩৩ পয়সায়। আনার সময় অনেক ডিম ভেঙে যায়। ফলে লাভ থাকে না। শুধু ক্রেতা ধরে রাখতেই ডিম বিক্রি করছেন। উৎপাদক ও পাইকার পর্যায়ে দাম নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে ডিম বা ব্রয়লার মুরগির দাম খুচরা বাজারে কমবে না বলে মনে করেন তিনি। মাছের বাজারেও একই অবস্থা। এদিন সকালে হরিণাকুণ্ডু শহরের দৈনিক বাজারে প্রতি কেজি রুই ও কাতলা প্রকারভেদে বিক্রি হয়েছে ২৫০-৩৫০ টাকায়। পাঙাশ ও তেলাপিয়ার দর ১৫০-২৫০ টাকা; চ্যাঙ ও দেশি পুঁটি বিক্রি হয় ৩২০-৫০০ টাকায়। মাছ বিক্রেতা জয়নাল মিয়ার ভাষ্য, আড়তে তেমন মাছ আসছে না। অল্প পরিমাণে যা আসছে, অনেক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। আড়তদার কামাল উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আড়তে মাছ আসে। কিছু এলাকায় বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে প্রচুর ঘের-পুকুর তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া প্রচুর মাছ মারাও গেছে। ফলে সরবরাহ কমেছে, তাই দাম বেশি। ঝিনাইদহ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নিশাত মেহের বলেন, এই এলাকায় খামারি নেই। ব্যবসায়ীরা পাবনা বা অন্য এলাকা থেকে বেশি দামে ডিম কিনেন। ফলে সরকারের বেঁধে দেওয়া দর নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। তবুও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ডিমসহ সব নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। প্রতিনিয়ত বাজার তদারকি চলছে জানিয়ে ইউএনও আক্তার হোসেন বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শেষ ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলে বড় ধাক্কা

তজুমদ্দিনে নবাগত ওসি ও সাংবাদিকদের মতবিনিময়

                   

জনপ্রিয় সংবাদ